রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে ভিক্ষা করছেন মঠবাড়িয়ার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আ. রশিদ। সারাদিন অন্যের কাছে হাত পেতে যা পান তাই দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজেকে, অন্ন তুলে দিয়েছেন বিধবা মেয়ে ও তার সন্তানের মুখে।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও এভাবেই দিন কাটছে বয়সের ভারে ন্যুজ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আ. রশিদের। স্ত্রী পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন আগেই। একমাত্র ছেলে বিয়ে করে হয়ে গেছেন আলাদা। বর্তমানে বিধবা মেয়ে আর সন্তানকে নিয়ে তার সংসার।
ভিক্ষার টাকায় কোনোরকমে তিনজনের খাবার জুটলেও করোনার পরি¯ি’তিতে সেটাতেও পড়েছে ভাটা। বাসা ভাড়া বকেয়া পড়েছে ৪ মাসের। যথাযথ সনদ ও প্রমাণ থাকার পরও সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি আ. রশিদ। ফলে সরকারি কোনো সাহায্য সহযোগিতাও মেলেনি।
জানা গেছে, আ. রশিদের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়া গ্রামে। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে নববধূকে বাড়িতে রেখে চলে যান খুলনায়। সেখান থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাসনাবাদ চব্বিশ পরগনায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। ফিরে এসে খুলনায় মেজর জলিলের নেতৃত্বাধীন ৯নং সেক্টরে যোগ দেন। তার দায়িত্ব ছিল খুলনা ও সুন্দরবন দিয়ে নিরাপদে সংখ্যালঘুদের পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছে দেয়া।
একদিন খুলনা থেকে নৌকাযোগে পশ্চিমবঙ্গে যাওয়ার পথে পাক বাহিনীর মুখোমুখি পড়ে যান। গুলিবিদ্ধ হন ডান উঁরুতে। কোনোরকমে সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পিরোজপুর জেলা ও মঠবাড়িয়া উপজেলা কমান্ড তাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রত্যয়নপত্র দেয়। রয়েছে আতাউল গনি ওসমানী কর্তৃক প্রদত্ত স্বাধীনতার সংগ্রামের সনদ। পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ নেয়ার প্রমাণপত্রও রয়েছে। তারপরও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারেননি তিনি।
আ. রশিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতার পর পিরোজপুরের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। ২১ পর আগে জীবন-জীবিকার তাগিদে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে পিরোজপুর থেকে ঢাকায় চলে আসেন লেখাপড়া না জানা আ. রশিদ।