বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৪১ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীর ইসলামীক মিশনে মহামারী করোনার মধ্যে একাই রোগীদের সেবা দিচ্ছেন মেডিকেল অফিসার ডা: ইলিয়াছ খান রায়হান। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫০ থেকে ৭০-৮০ জন রোগী দেখছেন তিনি। এখানে অন্য কোন চিকিৎসক না থাকায় তাকেই প্রতিদিন সামাল দিতে হচ্ছে সেবা নিতে আসা রোগীদের। করোনার মধ্যে তিনি জীবনের ঝূঁকি নিয়ে তার পেশাগত দ্বায়িত¦ নিষ্ঠার সাথে পালন করে চলেছেন বলে স্থানীয়রা জানান। এ উপজেলার লক্ষাধিক জনসাধারনের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ইনডোর সেবা দীর্ঘ ১১ বছরেও চালু না হওয়ায় বালিপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত ইসলামীক মিশনে দিন দিন ভিড় বাড়ছে সাধারন রোগীদের। শুধু স্থানীয়রাই নন, দুর দুরান্ত থেকেও এখানে সেবা নিতে আসেন রোগীরা। মাত্র ১০ টাকা ফি’র বিনিময়ে এখান থেকে সেবা পাচ্ছেন রোগীরা। ব্যবস্থাপত্রের পাশাপাশি ফ্রি ঔষধ বিতরণ ও পরামর্শ দেয়া হয় রোগীদের। সব মিলিয়ে সেবা কার্যক্রমে এলাকাবাসী সন্তোষ্ট থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন রয়েছে জনবল সংকট।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের জোড়া কবর নামক স্থানে ইন্দুরকানী-কলারন সড়কের পাশে ৮৩ শতক জমিতে ধর্ম মন্ত্রণালয় পরিচালিত স্থাপিত হয় এ প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রোগীদের নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে আসছে এ প্রতিষ্ঠানটি। তবে এ এখানে দীর্ঘদিন রয়েছে জনবল সংকট। মোট ১৪ জন চিকিৎক-কর্মচারির মধ্যে মাত্র একজন চিকিৎসক ও দুই জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী দিয়ে চলছে এটি। এখানে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার,মেডিকেল অফিসার, হোমওি প্যাথি চিকিৎসক, ফার্মাসিষ্ট, হিসাব সহকারী,হোমিও কম্পাউন্ডার,অফিস সহকারী,ল্যাবরেটরী টেকনেশিয়ান,লেডি ফার্মাসিস্ট,ল্যাবরেটরী টেকনেশিয়ান, এম এল এস এস, গার্ড, ক্লিনার সহ মোট ১৪টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে মেডিকেল অফিসার ডা: মো: ইলিয়াছ খান রায়হান, হিসাব সহকারী মো: নুরুল ইসলাম, এম এল এস এস মো: ওমর ফারুক এ তিন জন বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন একানে। তবে মাঝে মধ্যে প্রতিষ্ঠানের কাজে দায়িত্বরত ঐ চিকিৎসককে বাইরে যেতে হয় তখন রোগীদের সেবা দেয়া সম্ভব হয়না। তাছাড়া এখানে একটি আধুনিক মানের ভবনও দরকার বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্তপক্ষ।
নিয়মিত সেবা নিতে আসা স্থানীয় একটি স্কুলের অফিস সহকারী শ্যামল চন্দ্র জানান, আমি দীর্ঘদিন যাবত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ কারনে আমি এখান থেকে নিয়মিত সেবা নিয়ে নিয়ে থাকি। প্রতিষ্ঠানটির সেবা কার্যক্রম যথেষ্ঠ ভাল বলে তিনি জানান।
ইসলামীক মিশনের এমএলএসএস ওমর ফারুক জানান, গেল অর্থ বছরে ১২ হাজারের বেশি রোগী আমাদের এ হাসপাতালটি থেকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন। দিন দিন এখানে রোগী সংখ্যা আরো বাড়ছে।
ইসলামীক মিশনের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা: ইলিয়াছ খান রায়হানের কাছে কার্যক্রম সম্মন্ধে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, করোনার মধ্যেও আমরা আমাদের সেবা কার্যক্রম যথা সম্ভব চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এখানে চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মচারি সহ ১১ জন জনবল সংকট রয়েছে। মাঝে মধ্যে আমাকে প্রতিষ্ঠানের কাজে বাইরে যেতে হয় তখন রোগীদের সেবা দেয়া সম্ভব হয়না। জনবল সংকট না থাকলে প্রতিষ্ঠানটির সেবা কার্যক্রম আরো বাড়ানো যেত বলে তিনি জানান।