মঙ্গলবার, ০৬ Jun ২০২৩, ১০:৩৭ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:
বর্ষাকাল শেষ, শরতের শুরুতেই দিনাজপুরের বিভিন্ন পুকুরে দেখা মিলছে লাল শাপলা ফুল। পুকুরের পানিতে লাল আর সাদা শাপলা ফুল নিজেদের সৌন্দর্য মেলে ধরে ভ্রমণপিপাসু পর্যটককে থামিয়ে দেয়। পুকুরের পানিতে ভেসে থাকা লাল শাপলা ফুলটি যেন পথচারিকে নিজের সৌন্দর্য দিয়েই ইশারা করছে তার দিকে। ভাসমান লাল শাপলা ফুলের এখন কলি আসতে শুরু করেছে আর কিছু দিন চারদিকে পাতা বিছিয়ে লাল শাপলা ফুলটি ফুটিয়ে মেলে ধরবে তার নিজস্ব সৌন্দর্য। যা হবে আরও মনোমুগ্ধকর।
দিনাজপুরের সুখসাগর তীরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেল এই লাল শাপলা ফুল। সুখসাগরের মুল দীঘির পাশ ঘেঁষা জলাশয়ে ফুটে রয়েছে এই লাল শাপলা। দূর থেকে আরও বেশি সুন্দর লাগে।
সূর্য যখন পশ্চিম দিকে হেলে যায় পড়ন্ত বিকেলে লাল শাপলার সৌন্দর্য আরও বেশি ফুটে ওঠে। লাল শাপলার ভাসমান পাতা বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে নড়ে যায়। আর জলের ঢেউয়ে ব্যতিক্রমী ছন্দ তোলে।
দিনাজপুর সুখসাগর পাড়ের ছেলে সোহেল রানা বলেন, বর্ষাকালের শেষে প্রতি বছর সুখসাগরের তীর ঘেঁষা জলাশয়গুলোতে লাল শাপলা ফুল ফোটে।
আমাদের এলাকার কাউকে এই ফুল তুলতে দিই না বা আমরাও তুলি না। আমরা এলাকার যুবকরা একত্রিত হয়ে এই লাল শাপলা ফুল পাহারা দিয়ে থাকি। প্রতিদিন এই সুখসাগর পারে অনেকেই বেড়াতে আসে। বিশেষ করে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা এই লাল শাপলা ফুল দেখতে ভালোবাসে। অনেকে দূর থেকে ছবি তুলে নিয়ে যায়।
সুখসাগরের পাহারাদার প্রদীপ কুমার বলেন, সুখসাগর অনেক বড় একটা দীঘি। এই দীঘির দক্ষিণ দিকে জলাশয় রয়েছে। জলাশয়ে প্রচুর মাছ রয়েছে। কাউকে এই মাছ ধরতে দেওয়া হয় না কারণ মাছ ধরতে নামতে দিলে লাল শাপলা ফুল নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আমরা পালাক্রমে পাহারা দিয়ে থাকি।
সুখসাগর পারে বেড়াতে আসা জুলফি আক্তার বলেন, শহরের ইট-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি বাসায় থাকার পর একটু প্রশান্তির জন্য মাঝে মাঝে সুখসাগর পারে বেড়াতে আসা হয়। সুখসাগর একটা অনেক বড় দীঘি। দীঘির চারদিকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালি দিয়ে ঘেরা রয়েছে। সুখসাগরের তীর পাহাড়ের মতো উঁচু। সেখানে উঠে তাকালে মনে হয় দূরে পানিতে দোল খাচ্ছে লাল লাল শাপলা ফুল। লাল শাপলা ফুলের কাছাকাছি গিয়ে মোবাইল ফোনে অনেক ছবি তুলেছি। যতক্ষণ ছিলাম ততক্ষণই অনেক ভালো লেগেছে। পুকুরের পানিতে ভাসমান লাল শাপলা ফুল দেখতে দেখতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে টের পাইনি।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম বলেন, দিনাজপুর জেলায় বেশ কয়েকটি সাগর রয়েছে। তার মধ্যে রামসাগর, সুখসাগর, মাতাসাগর, জুলুমসাগর। সুখসাগর এলাকায় পর্যটন এলাকা হিসেবে বেশ কিছু কাজ করা হয়েছে। আরও কিছু কাজ করার পরিকল্পনা হয়েছে। অনেক ভ্রমণপিপাসু সুখসাগর পারে বেড়াতে আসে।
প্রাকৃতিকভাবেই লাল শাপলা ফুল ফোটে সুখসাগর ঘেঁষা জলাশয়গুলোতে। তা দেখার জন্য অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও এখানে জোরদার করা হয়েছে।