শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:১৩ অপরাহ্ন

সুন্দরবন এলাকায় সুপেয় পানি নিরসনে সংস্কার হচ্ছে ৮৮ পুকুর

সুন্দরবন এলাকায় সুপেয় পানি নিরসনে সংস্কার হচ্ছে ৮৮ পুকুর

0 Shares

অনলাইন ডেস্ক:

অচিরেই কেটে যাবে সুন্দরবনের সুপেয় পানির সমস্যা। দীর্ঘদিনের এই সংকট নিরসনের জন্য ৮৮টি পুকুর খনন ও পুন:খনন এবং ৭০টি পুকুরে পাকাঘাট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বনবিভাগ। জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়ানে এই পুকুর খনন প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। আগামী জুন মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে বলে বনবিভাগ সূত্র জানিয়েছে।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরে এই পুকুর খনন উদ্বোধন করা হয়েছে। এই কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার তালুকদার। এ সময় খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. মইন উদ্দিন খান, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এই ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। যা দেশের সংরক্ষিত বনভূমির ৫১ ভাগ। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টায় ছয়বার রুফ পরিবর্তন করে এই ম্যানগ্রোভ বন। দিনে দুইবার সমুদ্রের জোয়ারের লবণ পানিতে প্লাবিত হয় বনের ৪ হাজার ১৪২ দশমিক ৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা।

বিভিন্ন সময়ে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস এবং নানা প্রকৃতিক দুর্যোগে প্লাবিত হয়ে লবণ পানির সঙ্গে পলিমাটি উঠে ভরাট হয়ে যায় বনের অভ্যন্তরে থাকা পুকুরগুলো। যার ফলে খাবার অনুপযোগী হয়ে পড়ে এসব পুকুরের পানি। বিশেষ করে চরম পানি সংকটে পড়ে বনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণি। ইতোমধ্যে সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বন্য মহিষসহ কয়েক প্রজাতির প্রাণি। পাশাপাশি বনরক্ষী, বনজীবী, পর্যটকরাও এই পানি সংকটের মুখোমুখি হন। তাই দীর্ঘদিনের এই পানির সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নতুন পুকুর খনন ও পুরনো পুকুর সংস্থারের উদ্যোগ নেয় বনবিভাগ।

বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শরণখোলা রেঞ্জে ২৪টি, চাঁদপাই রেঞ্জে ২৬টি এবং পশ্চি সুন্দরবনে ৩৫টিসহ মোট ৮৮টি পুকুর খনন ও পুন:খনন করা হবে। এর মধ্যে নতুন করে খনন করা হবে শুধুমাত্র শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরে ২টি ও বগী স্টেশন অফিসে ১টিসহ মোট তিনটি পুকুর। নতুন খননকৃত তিনটি নিয়ে মোট ৭০টি পুকুরে নির্মিত হবে পাকা ঘাট।

পূর্ব সুন্দবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবনের মধ্যে থাকা পুকুরগুলো ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ভরাট হয়ে যাওয়ায় বছরের পর বছর ধরে বাঘ-হরিণসহ বন্যপ্রাণিগুলো সুপেয় পানি সংকটের মধ্যে ছিল। পুকুরগুলো খনন করা হলে বন্যপ্রাণির পাশাপাশি বনকর্মী, বনজীবী এবং পর্যটকদেরও সুপেয় পানির চাহিদা মিটবে।

ডিএফও বেলায়েত হোসেন আরো জানান, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে গোটা সুন্দরবনে মোট ৮৮টি পুকুর পুন:খনন এবং ৭০টি পুকুরের পাকা ঘাট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র শরণখোলা রেঞ্জে তিনটি নতুন পুকুর নতুন খনন করা হবে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে এসব পুকুর খনন ও ঘাট নির্মাণের কাজ শেষ হবে।





প্রয়োজনে : ০১৭১১-১৩৪৩৫৫
Design By MrHostBD
Copy link
Powered by Social Snap