বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন
চাকুরীর তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও বেতন না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে কাউখালী উপজেলার উত্তর হোগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী মোঃ শাহিন হাওলাদার । বহু পূর্বে তার বেতন ভাতা পাওয়ার আবেদনটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হলেও অদ্য পর্যন্ত তার বেতনের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি ।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার বেতনের প্রস্তাব ফাইলটি নাকি তিন মাস পূর্বে অধিদপ্তর থেকে নিখোঁজ হয়েছে । ফাইলটির কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না । অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে পুনরায় তার কাগজপত্র প্রেরণের কথা বলা হলে দপ্তরী শাহীন গত মার্চ মাসের ২৩ তারিখে মহাপরিচালক বরাবর একটি আবেদন সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ পুনরায় প্রেরন করা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত তার বেতনের প্রশাসনিক অনুমোদন হয়নি । ফলে দপ্তরী শাহীন তার পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোনপ্রকারে মানবেতর জীবনযাপন করছে ।
দপ্তরী শাহীন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ” আর পারছিনা ; তিন বছর যাবত চাকুরীতে যোগদান করে বিনা পারিশ্রমিকে দায়িত্ব পালন করছি । চাকুরীর আগে মোটরসাইকেল ভাড়া চালিয়ে যা আয় হতো তাতে সংসার চলে যেত । সোনার হরিণ বলে সরকারি চাকরি নিয়ে আজ পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে । এর থেকে কষ্টের আর কি হতে পারে! কবে বেতনের মুখ দেখবো জানিনা ।”
উত্তর হোগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল মামুন খান বলেন, দপ্তরি শাহীনের মুখের দিকে তাকানো যায় না । পর পর কয়েকটি ঈদ চলে গেল । আমরা বেতন পাই, বোনাস পাই অথচ শাহীন শূন্য হাতে বাড়ি ফেরে । আমরা যেটুকু সহায়তা করি তা যথেষ্ট নয় । একজন দপ্তরীর ফাইল খুঁজে পাওয়া যাবে না, সেজন্য দপ্তরি ভোগান্তির শিকার হবে এটা কাঙ্ক্ষিত নয় ।
জানা যায়, গত ২৯/৫/২০১৯ তারিখে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার ৪৯ নং উত্তর হোগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী পদে যোগদান করেন মোঃ শাহিন হাও আমলাদার । উক্ত নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন থাকায় তার বেতন ভাতা স্থগিত থাকে । গত ১২/১১/২০২০ তারিখ রিট পিটিশনটি ভ্যাকেট হয়ে যাওয়ায় শাহিন ৩১/১২/২০২১ তারিখে বেতন ভাতা পাওয়ার জন্য মহাপরিচালক বরাবর একখানা আবেদন করেন । আবেদনটি সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা সত্ত্বেও অদ্য পর্যন্ত তার বেতনের বিষয়টি সুরাহা হয়নি । অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ফাইলটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । এক্ষেত্রে ভুক্তভোগী শাহিন এই প্রতিবেদককে বলেন, ফাইল খুঁজে না পাওয়ায় তার কি অপরাধ! সচেতন মহলের প্রশ্ন- অধিদপ্তরের ফাইল খূঁজে না পাওয়ার দায় কার ?