বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন

ইন্দুরকানীতে চাকরি প্রত্যাশীকে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ইন্দুরকানীতে চাকরি প্রত্যাশীকে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

0 Shares

ইন্দুরকানী বার্তা:
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে স্থানীয় একটি মাদরাসার কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে চাকরি প্রত্তাশী সাংবাদিক মারুফুল ইসলামকে মারধর করার ঘটনায় একে অপররের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও ঐ সাংবাদিক। গতকাল বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো: মারুফুল ইসলাম মারধর করার অভিযোগ এনে ইন্দুরকানী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ করিম ইমন সহ দুজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় ইন্দুরকানী প্রেস ক্লাবে ইউপি চেয়ারম্যান ও এফ করিম আলিম মাদরাসার সভাপতি মাসুদ করিম ইমন তাকে জড়িয়ে গনমাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও থানায় মারধরের অভিযোগ দায়ের করার প্রতিবাদে মারুফুলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এসময় ঐ প্রতিষ্ঠানটির কয়েক জন শিক্ষক এবং ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ করিম ইমন ঐই মাদরাসার বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছাড়াও উপজেলা জাতীয় পার্টি (জেপির) বর্তমান সদস্য সচিব।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, সম্পূর্ণ সচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে ঐ প্রতিষ্ঠানটিতে গত শনিবার নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক মারুফুল ইসলাম অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদের একজন প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু পরীক্ষা শেষে তিনি নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রশ্ন পত্র নিয়ে বের হয়ে গেলে তার কাছে একাধিকবার প্রশ্ন প্রত্র চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি তাতে কর্ণপাত না করে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে চলে যাওয়ার চেস্টা করেন। পরে বাবু নামে তার এক কাছের ছোট ভাই আমার বরাত দিয়ে প্রশ্ন পত্রটি অফিস রুমে জমা দিতে বললে তার সাথে উদ্ভট আচারন করায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মাদরাসা মাঠে দুজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েক জন তাদের নিবৃত করার চেস্টা করেন। এ ঘটনায় মারুফুল কিছুটা আঘাত প্রাপ্ত হলে সাথে সাথে তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফের মাদরাসায় নিয়ে এসে শিক্ষক ও কয়েকজন সাংবাদিকের মধ্যস্থতায় ভুলবোঝাবুঝির জন্য তাৎক্ষণিক বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়া হয়। কিন্তু মিমাংসীত ইস্যু নিয়ে গতকাল বুধবার আমাকে জড়িয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের এবং গণমাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেন মারুফুল। যেটা আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও আমার সম্মান ক্ষুন্ন করার সামিল বলে আমি মনে করি।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার(৮ সেপ্টেম্বর) ইন্দুরকানী এফ করিম আলিম মাদরাসায় কর্মচারী নিয়োগে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে লিখিত পরীক্ষার পর প্রশ্নপত্র নিয়ে বের হবার কারনে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের অনুসারী এক যুবকের সাথে বাকবিতন্ডার জেরে মাদরাসা মাঠে সাংবাদিক মারুফুলকে মারধর করার ঘটনা ঘটে।

থানায় ঐ সাংবাদিকের দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, গত শনিবার ইন্দুরকানী এফ করিম আলিম মাদরাসায় সাংবাদিক মারুফুল ইসলাম মাদরাসার অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রার্থী হিসাবে অংশ গ্রহন করায় পূর্ব শত্রুতার জেরে চেয়ারম্যান তার উপর ক্ষিপ্ত হন। পরে নিয়োগ পরীক্ষা শেষে বের হয়ে যাবার সময় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ করিম ইমনের নেতৃত্বে তার সহযোগী ছাত্র সমাজ নেতা বাবু হাওলাদার মাদরাসার মাঠে অবস্থান করার সময় এলোপাথারি ভাবে সাংবাদিক মারুফুলকে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়।

পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিক মারুফুল বলেন, পরীক্ষা শেষে খাতা জমা দেয়ার সময় সাথে প্রশ্ন পত্রও জমা দিতে চাইলে পরীক্ষার হলে দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বাবুল হাওলাদার বলেন প্রশ্নপত্র লাগবেনা তাই আমি প্রশ্নপত্র সাথে নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যাই। পরে সভাপতি আমাকে ডেকে প্রশ্নপত্র ফেরত চাইলে আমি প্রথমে না দেওয়ায় তিনি আমার মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে যান। এ নিয়ে প্রথমে আমার সাথে তার তর্ক হয়। এছাড়া আমি যে পদে প্রার্থী ছিলাম চেয়ারম্যানের নিজস্ব পছন্দের প্রার্থী থাকায় তিনি পরীক্ষা নেয়ার আগেই একজনকে মনোনীত করে রাখেন। নিয়োগ দিবেন বলে ঐ ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ৬ লক্ষ টাকাও নিয়েছেন। বিষয়টি পূর্বে আমার মাধ্যমে জানাজানি হলে তিনি আমার উপর আগে থেকে ক্ষিপ্ত ছিলেন। অনিয়মের মাধ্যমে কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করলে পরে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তার এক সহযোগী আমার উপর হামলা করে।

তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, যে কোন এমপিও ভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা সতন্ত্র ভ্যানুতে নেয়ার নিয়ম। কিন্তু নিজেদের ইচ্ছেমত নিয়োগ দেবার জন্য এখানে সে নিয়ম মানা হয়নি। তাছাড়া মাদরাসাটিতে চারজন কর্মচারী নিয়োগের ব্যাপারে প্রায় ২৪ লাখ টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি। যার কারনে প্রকৃত মেধাবীরা চাকরি পাওয়া বঞ্চিত হয়েছেন।

এমন অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইমন জানান,কর্মচারী নিয়োগ দানে টাকা পয়সার নেয়া হয়েছে এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। লিখিত এবং ভাইবা পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য ও মেধাবীদেরই নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

ইন্দুরকানী থানার ওসি মো: এনামুল হক জানান, মাদরাসায় নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে সাংবাদিক মারুফুলের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেব।





প্রয়োজনে : ০১৭১১-১৩৪৩৫৫
Design By MrHostBD
Copy link
Powered by Social Snap