শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২২ অপরাহ্ন

ইন্দুরকানীতে হনুমান হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের; নি:সঙ্গ ভাবে একা ঘুরে বেড়াচ্ছে মা হনুমান

ইন্দুরকানীতে হনুমান হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের; নি:সঙ্গ ভাবে একা ঘুরে বেড়াচ্ছে মা হনুমান

0 Shares

ইন্দুরকানী বার্তা:
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে লাঠি ও লোহার শাবলের আঘাতে মারা যাওয়া দলছুট একটি বন্য হনুমান মাটি চাপা দেয়ার একদিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। গত গত সোমবার বেলা ৩টার দিকে উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের নিকাহ রেজিস্টার নুরুল ইসলামের নামের এক ব্যক্তির বাড়ির পিছন থেকে মাটি চাপা দেয়া মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এরপর গত সোমবার রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ইন্দুরকানী থানায় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন স্থানীয় এক ব্যক্তি।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার ইন্দুরকানি উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. নূরুল ইসলামের বাড়িতে খাবারের সন্ধানে দুটি হনুমান গিয়ে ছোটাছুটি করছিল। হনুমানের আচরণে বিরক্ত হয়ে হনুমান দুটিকে তাড়ানোর জন্য নূরুল ইসলামসহ কয়েক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা ও শাবল নিয়ে ধাওয়া করেন। লাঠি ও শাবলের আঘাতে একটি পুরুষ হনুমান গুরুতর আহত হয়ে মারা যায়। এরপর রাতে নূরুল ইসলাম চন্ডিপুর কেসি টেকনিক্যাল কলেজের সংলগ্ন তাঁর বাসার পিছনে মৃত হনুমানটি মাটিচাপা দেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে গত সোমবার বিকেলে বন বিভাগের লোকজন খবর পেয়ে নূরুল ইসলামের বাড়ির পাশ থেকে মাটিচাপা দেওয়া মৃত হনুমানটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠায়।
গতকাল সোমবার রাতে এ ঘটনায় উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের স্বপন পঞ্চায়েত বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে স্থানীয় থানায় বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এ মামলা করেছেন। এই আইনে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদন্ডের বিধান আছে।
এদিকে পুরুষ হনুমানটি খাবারের সন্ধানে গিয়ে রবিবার মানুষের হাতে মারা পড়ার পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চন্ডিপুর বাজারের বাসস্ট্যান্ড ও চন্ডিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে নি:সঙ্গভাবে একা ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম জানান, যশোরের কেশবপুর উপজেলা থেকে বিভিন্ন সময়ে ফল ও সবজিবোঝাই ট্রাকে উঠে হনুমান দলছুট হয়ে পিরোজপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়। কয়েক বছর ধরে কয়েকটি হনুমান এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও হাট বাজারে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে।
অভিযুক্ত কাজী মোঃ নুরুল ইসলাম হনুমানটি মেরে ফেলার অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, হনুমানটি আমি মারিনি হয়তো অন্য কেউ এটিকে আঘাত করেছে। আমার বাসার কাছে এটি মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে দুর্গন্ধ ছড়াবে ভেবে আমি হনুমানটি মাটি চাপা দিয়েছিলাম।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘হনুমানটির পিঠ ও মুখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে আমরা বলেছি, আঘাতের কারণে হনুমানটির মৃত্যু হয়েছে।’
পিরোজপুর জেলা বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার দত্ত বলেন, হনুমান হত্যা একটি অপরাধ। এ ঘটনায় ইন্দুরকানী থানায় মামলা হয়েছে।
ইন্দুরকানী থানার ওসি মো: এনামুল হক জানান,আঘাতে জখম হওয়া মাটি চাপা দেওয়া মৃত হনুমানটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।





প্রয়োজনে : ০১৭১১-১৩৪৩৫৫
Design By MrHostBD
Copy link
Powered by Social Snap