রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০১ অপরাহ্ন
ইন্দুরকানী বার্তা:
উপজেলার গৌরিপুর ইউনিয়নের মাটিভাঙ্গা গ্রামের প্রতিবন্ধী ফরিদ অন্যের ওপর নির্ভরশীল না থেকে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। স্থানীয় মালিয়ার হাটে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে কোন রকমে চলছে তার ছোট্ট দোকান। তার দাবি, একখন্ড জমি বরাদ্দ পেলে সেখানে একটি ঘর তুলে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারতেন। ফরিদ ৩২ বছর বয়সে একটিবারের জন্যও দুই পায়ে দাঁড়াতে পারেননি। দুই হাতও তার অসাড়। ৩২ বছর বয়সে তার শরীর বেড়েছে মাত্র ২৬ ইঞ্চি।
শারীরিক বাধাঁকে উপেক্ষা করে ২০ বছর আগে জীবনযুদ্ধে নামেন তিনি। ২০ বছর ধরে মায়ের কোলে চড়ে সকালে বাড়ি থেকে বের হন দোকানের উদ্দেশ্যে। দিনভর দোকানের বেচাকেনা করেন। নিজে কোনো ক্রেতার হাতে মালপত্র তুলে দিতে পারেন না। দাম পরিশোধ করে ক্রেতারা নিজে নিজেই দোকান থেকে মালপত্র নেন। বেচাকেনা শেষে আবার রাত ১০টার দিকে মায়ের কোলে চড়ে বাড়িতে ফেরেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী ফরিদ হোসেন আত্মনির্ভরশীল একজন মানুষ।
গৌরিপুর ইউনিয়নের মাটিভাঙ্গা গ্রামের কৃষক বারেক মৃধা ও রওশন আরা বেগম দম্পতির চার ছেলের মধ্যে ফরিদ হোসেন সেজ। ফরিদ হোসেনের অন্য ভাইয়েরা পরিপূর্ণ শারীরিক গঠন নিয়ে বেড়ে উঠলেও শুধু তার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। হাত ও পা অস্বাভাবিক রকমের হওয়ায় তার জীবন ধারণের কোনো কাজে লাগাতে পারছেন না। ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েও কোনো লাভ হয়নি। মালিয়ারহাট বাজারের পাকা সেতু সংলগ্ন ছোট পরিসরে একটি মুদি দোকান চালান তিনি। নাম ফরিদ স্টোর। ২০ বছর ধরে মালিয়ারহাট বাজারে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে চার হাজার টাকার পণ্য তুলে ব্যবসা শুরু করেন ফরিদ। এখন তার দোকানের ব্যবসার পরিধি বেড়েছে।
সম্প্রতি ফরিদের এমন অসহায় অবস্থা দেখে স্থানীয় এক সাংবাদিকের চেষ্টায় উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে একটি হুইল চেয়ার পেয়ে এখন অন্যের সাহায্যে দোকানে আসা- যাওয়া করে।
রবিবার সকালে ফরিদের সাথে একান্ত আলাপকালে এ প্রতিদেককে তিনি জানান, শত কষ্টের গড়া এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইতোপূর্বে কয়েকবার চুরি হয়েছে। তাই দোকানে তেমন কোন মালামাল নেই। কষ্ট আর অভাবের সাথে প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধ করছেন ফরিদ। প্রতিবন্ধী ফরিদের জীবনে একটু সুখ দিতে দেশের বিত্তবান ও পরোপকারী হৃদয়বান ব্যক্তিদের আর্থিক ভাবে সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসা সকলের প্রয়োজন। যোগাযোগ ও সাহায্য পাঠানোর জন্য প্রতিবন্ধি ফরিদের বিকাস নম্বর দেয়া হলো – ০১৭৪০৭৪৮৮৮৮ ।