বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
ইন্দুরকানী বার্তা ডেস্ক : ভাণ্ডারিয়া সদর সাব রেজিস্ট্রি ভবন এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভবনের ছাদের লোহার বিম ও প্লাস্টার ভেঙে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট খাট দুর্ঘটনা। যে কোন মুহূর্তে ছাদ ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও জমি রেজিস্ট্রি সংশ্লিষ্ট গ্রহীতারা জরাজীর্ণ ভবনে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত রোববার সকালে হঠাৎ ছাদের পলেস্তারা খসে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এতে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসটি নির্মিত হয়। তবে কোন মন্ত্রণালয়ের কোন বিভাগ থেকে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে তার কোন হদিস নেই। সঠিক কোন তথ্য সাব রেজিস্ট্রি দপ্তরে নেই। নির্মাণের পর এরশাদ মুক্তি পরিষদ হিসেবে দীর্ঘদিন ভবনটি ব্যবহার করা হয়। এক সময় সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম চলতো উপজেলা সদরের একটি ভাড়া ঘরে। পরে শহরের পূর্ব ভাণ্ডারিয়ায় ওই এরশাদ মুক্তি পরিষদের হাত থেকে ২০০৪ সালের নভেম্বর উদ্ধার হওয়ার পর ভবনটি উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ভবনটি বেহাল দশায় পর্যবসিত।
নির্মাণের সময় ১০ ইঞ্চি ইটের গাঁথুনি দিয়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকেই ভবনটির দেয়ালে ফাটল ও ছাদ দিয়ে পানি পড়া শুরু করে। নির্মাণের পর অদ্যবধি সংস্কার না হওয়ার কারণে ভবনটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বর্ষার কারণে কোন মতে পলিথিন দিয়ে মূল্যবান দলিল পত্র ও বালাম বই সংরক্ষণ করে আসছে সাবরেজিস্ট্রি দপ্তর।
তবে, এ সমস্যার ফলে যে কোন সময় সংরক্ষণকৃত মূল্যবান কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অপর দিকে দলিল রাইটারদের দলিল বালামে তুলতে তাদের যে সময় লাগতো, বর্তমানের তিন থেকে চার গুণ বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। মূলত বৃষ্টিতে ছাতা ও পলিথিন দিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এমনকি কর্মকর্তা, কর্মচারী, দলিল লেখক, গ্রহীতদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ভবনে প্রবেশ করতে হয়। এ কারণে সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না বলে ভুক্তোভোগীরা জানান। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ বিপদ জনক সাব রেজিস্ট্রি ভবন থেকে অতিদ্রুত মুক্তি চেয়েছেন এবং নতুন সাব রেজিস্ট্রি অফিস নির্মাণের দাবী জানান।
উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম আকন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এই ভবনে তাদের কাজ করতে গিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। ভবন ধসের আতঙ্ক নিয়ে সংশ্লিষ্টরা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত বিষয়টি দেখা উচিত। না হলে ভবন ধসে প্রাণহানী ঘটতে পারে। উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার মো. হারুন আল ইসা বলেন, আমি এ উপজেলায় খণ্ডকালীন সপ্তাহে দুই দিন দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু আমার দপ্তরে বসতে ভয় হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।