বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১০:১৭ অপরাহ্ন

পিরোজপুরে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সহিংসতা; আহত-৪

পিরোজপুরে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সহিংসতা; আহত-৪

0 Shares

পিরোজপুর প্রতিনিধি:
পিরোজপুরে আওয়ামী লীগের নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতায় দুই পক্ষের ৪ জন আহত হয়েছে। আজ রবিবার দুপুরে পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ও পৌর শহরের পাড়েরহাট চৌমূহনি (এমপি মোড়) এলাকায় পৃথক এ সংঘাত ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এসময় একটি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ, দুটি ইজিবাইক ভাংচুর ও বেশ কয়েকটি দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
এদিকে, এ ঘটনার জের ধরে নৌকা সমর্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু’র বাসায় গুলি, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইখতেখার মাহমুদ সজলের বাসা ও অফিসে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, রবিবার দুপুর ২টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়ালের কর্মী-সমর্থকদের একটি দল তার (একেএমএ আউয়াল) সেজ ভাই সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মুজিবর রহমানের ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর মুজিব অভি’র নেতৃত্বে সদর উপজেলার শিকদারমল্লিক ইউনিয়নের পাঁচপাড়া এলাকা দিয়ে ফেরার পথে কদমতলা এলাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী এবং পিরোজপুর-১ আসনের বর্তমান এমপি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সমর্থকরা তাদের উপর হামলা করে মারধর করে। এতে অভিসহ তার সাথে থাকা তিনজন আহত হয়। আহত অন্যরা হল- রনি দাস ও স্মরণ চক্রবর্তী। রনি দাশকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
উল্লেখ্য, আহত তারভীর মুজিব অভি পিরোজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামলা রহমানের বড় ছেলে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে অভির পিছনে থাকা শতাধিক মোটর সাইকেলের একটি বহরে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা হাতুড়ি, দা, রড়, জিআই পাইপ, লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে কদমতলা বাজারের বিভিন্ন দোকানপাটে ভাংচুর চালায়। এসময় তারা দুটি ইজিবাইক ভাংচুর করে। পরে শহরে আসার পথে ব্রাহ্মনকাঠী এলাকায় একটি মোটর সাইকেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে তারা শহরে হাতুড়ি, রড়, জিআই পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে শহরে মহড়া দেয়। এসময় শহরের পাড়েরহাট চৌমূহনি (এমপি মোড়) এলাকায় নৌকা মার্কার সমর্থক পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছাব্বির আহমেদের উপর হামলা করে মারধর করে। তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়।
আহত অভি’র ছোট ভাই এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তৌকির মুজিব আবির জানায়, দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সিকদার মল্লিক ইউনিয়ন থেকে অভি পিরোজপুরে ফিরছিল। এ সময় অভিকে বহনকারীসহ দুইটি মোটর সাইকেল কিছুটা আগে চলে আসে। এ সময় কদমতলায় বাজার এলাকায় মন্ত্রী রেজাউল করিমের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এস এম বায়জিদ হোসেনের লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা করে। এতে অভি’র সাথে থাকা রনি দাসকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে এবং স্মরণ চক্রবর্তীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরবর্তীতে অভি’র সহযোগীরা আসায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপরে অভিসহ আহত তিনজনকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়।

হামলার ঘটনার বিষয়ে সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এস এম বায়জিদ হোসেন তার সম্পৃক্ততার বিষয় অস্বীকার করে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাইয়ের ছেলে অভির নেতৃত্বে লোকজন কদমতলা এসে নৌকা মার্কার অফিস ভাংচুর করে। এ সময় এলাকাবাসী ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এসময় পড়ে গিয়ে অভি আহত হয়। এ ঘটনার পরে অভির পিছনে থাকা মোটর সাইকেলে বহরের লোকজন এসে কদমতলা বাজারের রাস্তার পাশে থাকা দোকানপাট কুপিয়ে ও পিটিয়ে ভাংচুর করে। দুটি ইজিবাইকও ভাংচুর করে। পরে তারা শহরে গিয়ে তারা সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজে ঢুকে মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের বিলবোর্ড ও ব্যানার ছিড়ে ফেলে।
এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএমএ আউয়াল এর সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে শহরে মহড়া দিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার মাহমুদ সজলের বাসা ও অফিসে হামলা করে ভাংচুর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় সজলের বাসার সামনে দুটি দোকানেও ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনার পরে বেলা ৩টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা যুবলীগের আক্তারুজ্জামান ফুলু’র বাসায় গুলির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আক্তারুজ্জামান ফুলু জানান, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে একটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটর সাইকেলে করে একদল যুবক বাসার সামনে এসে গালিগালাজ করে এবং ৫/৬ রাউন্ড ফাকা গুলি করে চলে যায়।

এছাড়া জেলা মৎস্যজীবি লীগের আহবায়ক সিকদার চানের বাসায় গিয়ে গালিগালাজ করার অভিযোগ রয়েছে।
এসব ঘটনার পর পিরোজপুর শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলামসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলসহ শহরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছেন।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আশিকুজ্জামান জানান, কদমতলা ও শহরের দুটি মারামারির ঘটনায় দুই পক্ষের ৩জন আহত হওয়ার খবর পাওযা গেছে। তবে কারও বাসায় কোন গুলির খবর পাওয়া যায় নি। শহরে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।





প্রয়োজনে : ০১৭১১-১৩৪৩৫৫
Design By MrHostBD
Copy link
Powered by Social Snap